ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার পরে অবশেষে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে ‘সুন্দরবনের মধু’ নিবন্ধিত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, শিল্প নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি)। রোববার (৩০ জুন) শিল্প মন্ত্রণালয় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সুন্দরবনের মধুকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধন পাওয়ার প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হয়।
১০ হাজার বর্গ কিলোমিটারজুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬৬ শতাংশ বাংলাদেশে এবং ৩৪ শতাংশ পড়েছে ভারতে। বন বিভাগের তথ্যমতে, সুন্দরবন থেকে ২০২২ সালে ২৩০ মেট্রিক টন এবং ২০২৩ সালে ৩০০ মেট্রিক টন মধু আহরণ করেছে বাংলাদেশ। যেখানে গত ৭ বছরে ভারতের সংগ্রহ মাত্র ১৩৭ মেট্রিক টন মধু। এরপরেও ২০২১ সালের ১২ জুলাই সুন্দরবনের মধুকে ভৌগলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধন করতে পেটেন্ট ডিজাইন ও ট্রেডমাকর্স অধিদপ্তরে আবেদন করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন করপোরেশন। যাচাই-বাছাই শেষে গত ২ জানুয়ারি জিআই সনদও দেয়া হয়েছিল ভারতকে। এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের পর শেষ পর্যন্ত নড়েচড়ে বসে দেশের শিল্প মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের আবেদন পর্যালোচনা করে প্রাপ্ত তথ্যাদি জার্নাল আকারে প্রস্তুত করে বিজি প্রেসে প্রেরণ করা হয়েছে। জার্নাল প্রকাশের তারিখ হতে দুই মাস সময়ের মধ্যে তৃতীয় কোন পক্ষের আপত্তি বা বিরোধিতা না পাওয়া গেলে পণ্যটিকে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য হিসেবে নিবন্ধন প্রদান করা হবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা যায়, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক কর্তৃক ‘সুন্দরবনের মধু’ পণ্যটিকে জিআই পণ্য হিসেবে নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট আবেদন জমা দেয়া হয়। ডিপিডিটি উক্ত আবেদন পরীক্ষান্তে আবেদনে উল্লিখিত বিষয়ে আরো অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের জন্য আবেদনকারীকে অনুরোধ জানায়। ডিপিডিটি’র অনুরোধের প্রেক্ষিতে সুন্দরবনের মধুর পুষ্টিগুণ বিষয়ে বিএসটিআই একটি পরীক্ষা প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ডিপিডিটিকে দেয়। এ ছাড়াও চাহিত অন্যান্য তথ্যাদি না পাওয়ায় উক্ত বিষয়ে শুনানি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসন, বাগেরহাটের কাছে তথ্য চাওয়া হয়। চাহিত তথ্যাদি আবেদনকারী চলতি বছর ২৭ জুন পুনরায় দাখিল করে।