সিলেটে ক্রমেই বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। সরকারি হিসেবে মঙ্গলবার (১৮ জুন) থেকে বুধবার (১৯ জুন) দুপুর পর্য সীমান্তবর্তী ছয় উপজেলাসহ সবকটি উপজেলায় পানিবন্দি পৌনে সাত লাখ মানুষ। এর মধ্যে প্রতিনিয়ত প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।
সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান আজ জানান, মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার এক হাজার ৩২৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৭ জন মানুষ বন্যা আক্রান্ত। ৫৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ১৭ হাজার ২৮৫ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তবে আজ এ সংখ্যা দ্বিগুন হতে পারে। এদিকে মহানগরের ৮০টি আশ্রয় কেন্দ্রে আরও কয়েক হাজার বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া সুরমার পানি সিলেট পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার, অমলসীদ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি ৪৭ সেন্টিমিটার ও একই নদীর ফেঞ্চুগঞ্জে ৮৮ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার ওপরে। আর সারি গোয়াইনের পানি ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহর, বরইকান্দি, যতরপুর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, কাজিরবাজার, মাদিনা মার্কেট, আখালিয়া ও মেজরটিলাসহ অধিকাংশ এলাকা বন্যাকবলিত। এ ছাড়া জেলার গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জসহ কয়েকটি উপজেলার আঞ্চলিক সড়কগুলো বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এদিকে পানিবন্দি মানুষের কাছে নৌকায় করে পাঠানো হচ্ছে ত্রান সামগ্রী। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অনেক গ্রাম ও আশ্রয় কেন্দ্রের মানুষ ত্রান সাহায্য নিচ্ছেন ৩৩৩ ও ৯৯৯ জরুরি নম্বরে কল করে। জাতীয় এ সেবা নম্বরে কলেরভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পাঠানো হচ্ছে খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ওষুধ, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য।
সিলেটে গেল মাসের শেষ দিকে আগাম বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে পানি নেমে যায়। চলতি মাসে আবার বন্যার কবলে পড়ে সিলেট। বিশেষ করে ঈদের দিন (সোমবার) ভোররাত থেকে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয় নগরীর অধিকাংশ এলাকাসহ সিলেটের ৭টি উপজেলা।