বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
বসুন্ধরা-বেক্সিমকো-এস আলমসহ সাত কোম্পানির শেয়ার স্থানান্তরে নিষেধাজ্ঞা ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের সময় ঠিক করতে হবে’ হাত-পা বেঁধে শিক্ষর্থীকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা ‘ফাত্তাহ-১’ হাইপারসনিকসহ ইরানের অস্ত্রাগারের যেসব ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ‘বড় ভুল’ করেছে ইরান, হুমকি নেতানিয়াহুর রংপুর মহানগর আ. লীগের সাবেক সহ-সভাপতি পান্না গ্রেফতার সিটি-আর্সেনালের জয়, সেল্টিককে গোলের বন্যায় ভাসালো ডর্টমুন্ড পাল্টা জবাবে ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোতে ইসরায়েলি হামলার ঝুঁকি নারায়ণগঞ্জে শামীম ওসমান ও আইভীসহ ৪০১ জনের নামে হত্যা মামলা মারা গেছেন আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ অটোরিকশা চালক সুফিয়ান

নোনা জলের আতঙ্কে, ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার জনগণ!

  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০২৪, ৪.৩০ এএম
  • ৩৪ টাইম ভিউ

ঘূর্ণিঝড় রেমালের বিধস্ত বেড়িবাঁধগুলোর সংস্কার না হওয়ায় পুরোপুরি অরক্ষিত ভোলার মনপুরা। এতে করে নোনা জলে প্লাবিত হওয়ার আতঙ্কে দিন কাটছে বাসিন্দাদের। হুমকির মুখে পড়েছে আমনের চাষাবাদ। এ অবস্থায় কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে কেবল দুর্যোগের ওপরই দায় চাপাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

বেড়িবাঁধের এ অংশটি ভেঙে গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে নোনা পানি ঢুকছেই মনপুরায়, যে আতঙ্কে দিন কাটছে এলাকাবাসীর

রেমালের আঘাতে গত ২৭ মে মনপুরার মাস্টারহাট এলাকার বাঁধটি ভেঙে গেলে মেঘনার জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। নোনা পানিতে তলিয়ে যায় ওই এলাকার শত শত ঘরবাড়ি ও আমন ধানের জমি। ভেসে যায় কয়েকশ পুকুরের মাছ। উন্মুক্ত হয়ে যাওয়া এ বাঁধ বন্ধ করতে এখনও নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। বাঁধের ভেঙে যাওয়া স্থান দিয়ে এখনও প্রতিদিন জোয়ার-ভাটার নোনা পানি লোকলয়ে যাওয়া-আসা করছে।

পাউবোর তথ্যানুযায়ী, রেমালের আঘাতে মনপুরার ৭৮ কিলোমিটার বাঁধের ১২টি স্থানে ১৬৫ মিটার বাঁধ সম্পূর্ণ উন্মুক্ত হয়ে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও তিন কিলোমিটার বাঁধ।

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো কঙ্কালের মতো পড়ে আছে। ক্ষত-বিক্ষত বাঁধের কিছু কিছু স্থানে এক-দুই হাত অবশিষ্ট আছে। কোথাও আবার একজন মানুষের হাঁটার জায়গাও নেই।

স্থানীয়রা জানান, এমন নাজুক বাঁধ প্রমত্তা মেঘনার ঢেউ থেকে মনপুরাবাসীকে রক্ষা করতে পারবে না। সামান্য ঢেউয়ের আঘাতেই ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের অবশিষ্ট অংশ মেঘনায় ভেসে যাবে। এতে পুরো বর্ষা মৌসুমে জোয়ার-ভাটায় ভাসতে হবে মনপুরাবাসীকে। নোনা জলের কারণে বন্ধ হয়ে যাবে এলাকায় আমনের চাষাবাদ।

মনপুরায় রেমালে ঘরহারা মানুষের খোঁজ নেয়নি কেউ

এ অবস্থার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড ও নতুন বাঁধ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারদের গাফিলতিকে দায়ী করেছেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। মাস্টার হাট এলাকার আমিনুল হক, রহমানপুর গ্রামের রকিবুল হাসান ও অনিল চন্দ্রসহ অনেকে প্লাবন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানান।

মনপুরায় বেড়িবাঁধটি ভেঙ্গে এতটাই সরু হয়ে গেছে যে অনেক স্থানে হাঁটার মতো জায়গাও নেই।

দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অলিউল্যাহ কাজল অভিযোগ করে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে কাজ শুরুতে বিলম্ব করায় এমন দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বাঁধ দ্রুত সংস্কার করতে না পারলে এবার আমন চাষ করা যাবে না। অমাবশ্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারে গ্রাম প্লাবিত হবে।

রেমালে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মনপুরার কলাতলীর চর ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলউদ্দিন হাওলাদার জানান, ২৫ হাজার মানুষের বসতির এ ইউনিয়নে কোনো বেড়িবাঁধ নেই । তাই জোয়ার-ভাটা থেকে রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ড যেসব স্থানে বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে গেছে, সেসব স্থানে মাটি ফেলার কাজ শুরু করলেও তাতে আস্থা নেই এলাকাবাসীর।

কলাতলীর চরে বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি বলে মনে করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জহিরুল ইসলাম।

ভোলা পাউবোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানান, ভেঙে যাওয়া বাঁধের অধিকাংশ অংশ পুননির্মাণ করা হয়েছে। জোয়ার-ভাটা থেকে মনপুরাবাসীকে রক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত অবশিষ্ট বাঁধের সংস্কারে তারা কাজ করছেন। প্রকল্পের অধীনে যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে, তাদের মাধ্যমেই সংস্কার করা হচ্ছে।

মোট ৩৭৩ বর্গ কিলোমিটারের মনপুরাকে জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় ৭৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এসব বাঁধ স্থায়ীভাবে রক্ষা ও নদীভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক হাজার ১১৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো খবর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© All rights reserved © 2024

Design & Developed BY আজকের চিত্র